ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কেঁপে উঠল কিয়েভ, নিহত ৪
রুশ ক্ষেপণাস্ত্র–ড্রোন হামলায় কিয়েভে নিহত ৪: ভোরে দফায় দফায় বিস্ফোরণ
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে আবারও রাশিয়ার ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা। স্থানীয় সময় ভোরে একাধিক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে শহর, এতে কমপক্ষে ৪ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে। কিয়েভ সামরিক প্রশাসন নিশ্চিত করেছে যে আবাসিক ভবন, গুদামঘর এবং জরুরি অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হামলার ধরন: সমন্বিত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আক্রমণ
ভোররাত ৩টার দিক থেকে আকাশে টানা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইউক্রেনীয় বাহিনীর দাবি—রাশিয়া স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ‘শ্যাহেদ’ আত্মঘাতী ড্রোন ব্যবহার করে “সমন্বিত আক্রমণ” চালিয়েছে।
যদিও কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করা সম্ভব হয়েছে, তবুও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, যা ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়েছে।
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির চিত্র
জরুরি উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন—
-
ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪ জনের মরদেহ
-
১২ জনের বেশি আহত, কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর
-
অন্তত ৩টি আবাসিক ভবন আংশিক ধসে পড়েছে
-
কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত
ঘটনাস্থলে ভাঙা কাচ, ধাতব টুকরো ও ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে ছিল সর্বত্র। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হামলার পরপরই বহু এলাকায় আগুন ধরে যায়।
কিয়েভজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার
হামলার পর কিয়েভের বিভিন্ন এলাকায় জরুরি অ্যালার্ম বাজিয়ে নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়।
বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় অনেক স্থানে মোবাইল নেটওয়ার্কেও সমস্যা দেখা দেয়। নিরাপত্তা বাহিনী শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অতিরিক্ত টহল দিচ্ছে।
রাশিয়ার অবস্থান
রাশিয়া সরাসরি এই হামলা নিয়ে নতুন কোনো মন্তব্য না করলেও গত কয়েকদিন ধরে তারা দাবি করে আসছে যে ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটি ও অস্ত্রভান্ডারই তাদের লক্ষ্যবস্তু। তবে বাস্তবে বেসামরিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটায় আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনা বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
হামলার খবর প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার এ আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানায়। ইউক্রেনকে অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা সহায়তা দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।
পরিস্থিতির সারসংক্ষেপ
রাতের অন্ধকারে সমন্বিত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কিয়েভের ওপর যুদ্ধের চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়ায় মানবিক সংকটের আশঙ্কা গভীর হচ্ছে।

No comments