চিনিকে কেন ‘নতুন কোকেন’ বলা হচ্ছে? ভয়াবহ ক্ষতির কথা জানালেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ
চিনিকে কেন ‘নতুন কোকেন’ বলা হচ্ছে?—বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
চিনি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন পুষ্টিবিদ ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা। সাম্প্রতিক গবেষণা ও স্বাস্থ্য–বিশেষজ্ঞদের মন্তব্যে নতুন এক শব্দ সামনে এসেছে—‘নতুন কোকেন’। কারণ, মানবদেহে চিনির প্রভাব ও আসক্তির প্যাটার্ন অনেক সময় মাদকাসক্তির মতো আচরণ তৈরি করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
চিনি আসলে কেন এত বিপজ্জনক?
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত চিনি রক্তনালীর ওপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি করে। এতে—
-
ধীরে ধীরে ধমনী শক্ত হয়ে যায়,
-
রক্তচাপ বেড়ে যায়,
-
ইনসুলিন প্রতিরোধ বাড়ে এবং
-
হৃদরোগের ঝুঁকি কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়।
এ ছাড়া ইদানীং দেখা যাচ্ছে, অনেকেই অজান্তেই দিনে কয়েকগুণ বেশি চিনি গ্রহণ করছেন। কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্যাকেট স্ন্যাকস—সব জায়গাতেই লুকানো চিনি থাকে, যা দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে আনে।
আসক্তির মতো প্রভাব—‘নতুন কোকেন’ উপমার কারণ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত চিনি মস্তিষ্কে ডোপামিন লেভেল দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। এই ডোপামিন রিলিজ মানুষকে মুহূর্তেই আনন্দ দেয়, ফলে একসময় শরীর আরও বেশি চিনি চাইতে শুরু করে।
এই বিঞ্জ-ইটিং বা বারবার খাওয়ার প্রবণতা মাদকাসক্তির মতো আচরণ তৈরি করে—এ কারণেই চিনিকে ‘নতুন কোকেন’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে।
চিনির ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকি
-
হৃদরোগের ঝুঁকি দ্রুত বাড়ায়
-
ডায়াবেটিস, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স
-
ওজন বৃদ্ধি, বিশেষ করে পেটের মেদ
-
ফ্যাটি লিভার
-
ঘুমের ব্যাঘাত
-
হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট
-
স্থায়ী ক্লান্তি ও মাথা ব্যথা
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন যতটা চিনি নিরাপদ, বাস্তবে মানুষ তার দ্বিগুণ বা তিনগুণ পর্যন্ত গ্রহণ করছেন।
সমাধান কী?
-
চিনি কমিয়ে প্রাকৃতিক মিষ্টি (মধু, ফল) বাড়ানো
-
প্যাকেটজাত খাবার কমানো
-
পানি ও ফলের রসের বদলে আসল ফল খাওয়া
-
দিনে চিনি ৪–৬ চামচের বেশি না খাওয়া
-
নিয়মিত ব্যায়াম করা
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের ভাষায়—
“চিনি সরাসরি রক্তনালীর শত্রু। তাই যেভাবে মানুষ কোকেনকে ভয় পায়, স্বাস্থ্য সচেতনরা খুব শিগগিরই চিনিকেও সেভাবে দেখবে।”


No comments