ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: কেন আবারও বড় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নেতানিয়াহু? নেপথ্যে ট্রাম্পের সাথে বৈঠক
মধ্যপ্রাচ্যে আবারও যুদ্ধের দামামা: ইরানে নতুন হামলার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করছে ইসরায়েল
মেটা ডেসক্রিপশন: ২০২৫ সালের জুনে ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর আবারও ইরানে হামলার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন আদায়ে নতুন সামরিক ছক নিয়ে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন নেতানিয়াহু। জানুন বিস্তারিত।
ভূমিকা
মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে আবারও ঘনীভূত হচ্ছে যুদ্ধের কালো মেঘ। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধের ক্ষত এখনো শুকায়নি, এর মধ্যেই তেল আবিব থেকে নতুন করে সামরিক অভিযানের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানের কৌশলগত স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানার জন্য একটি নতুন এবং শক্তিশালী পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।
ট্রাম্প-নেতানিয়াহু বৈঠক: আলোচনার কেন্দ্রে ইরান
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু। এই বৈঠকের প্রধান এজেন্ডাই হচ্ছে ইরানকে থামানো। ইসরায়েলের দাবি, ইরান তাদের ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎপাদন ক্ষমতা পুনরায় বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং গত যুদ্ধের পর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মেরামত করছে। এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগেই ইসরায়েল দেশটিতে বড় ধরনের ‘প্রি-এম্পটিভ অ্যাটাক’ বা আগাম হামলা চালাতে চায়।
ইসরায়েলের নতুন সামরিক পরিকল্পনার ৩টি দিক
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) যে খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করেছে তাতে মূলত তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে:
১. ব্যালিস্টিক মিসাইল সেন্টার: ইরানের ভূগর্ভস্থ মিসাইল উৎপাদন ও মজুত কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করা।
২. পারমাণবিক স্থাপনা: ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলোতে সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়ে তাদের কার্যক্রম কয়েক বছর পিছিয়ে দেওয়া।
৩. প্রক্সি নেটওয়ার্ক: কেবল ইরানের ভেতরেই নয়, মধ্যপ্রাচ্যে তেহরানের অনুসারী গোষ্ঠীগুলোর কমান্ড সেন্টারে একযোগে হামলা।
ইরানের পাল্টা হুঁশিয়ারি: ‘ভয়াবহ পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকুন’
ইসরায়েলের এই নতুন পরিকল্পনার খবরে তেহরান বসে নেই। ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের (IRGC) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যদি ইসরায়েল বা তাদের মিত্ররা কোনো ধরনের হঠকারিতা করে, তবে তার জবাব হবে ‘কল্পনাতীত’। ইরানের দাবি, তাদের হাতে এমন সব উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যা ইসরায়েলের আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘অ্যারো’ বা ‘ডেভিডস স্লিং’ ভেদ করতে সক্ষম।
বিশ্বের উদ্বেগ ও সম্ভাব্য ফলাফল
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২০২৫ সালের ১৩ জুন শুরু হওয়া ১২ দিনের যুদ্ধে বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছিল। তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এখন যদি আবারও সরাসরি যুদ্ধ শুরু হয়, তবে তা বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন এবং তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করবে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল যদি কোনো বড় পদক্ষেপ নেয়, তবে তা রাশিয়া ও চীনের মতো পরাশক্তিগুলোকেও এই দ্বন্দ্বে টেনে আনতে পারে।
একনজরে বর্তমান সংকট (২১ ডিসেম্বর ২০২৫):
| বিষয় | বিস্তারিত তথ্য |
| মূল লক্ষ্য | ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল ও পারমাণবিক স্থাপনা |
| প্রধান চরিত্র | নেতানিয়াহু (ইসরায়েল), ডোনাল্ড ট্রাম্প (যুক্তরাষ্ট্র), খামেনি (ইরান) |
| সম্ভাব্য সময় | ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বা তার আগে |
| ঝুঁকি | বিশ্বজুড়ে তেলের দাম বৃদ্ধি ও আঞ্চলিক যুদ্ধ |
উপসংহার
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার এই ‘শীতল যুদ্ধ’ এখন আর কেবল ছায়া যুদ্ধের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। যে কোনো সময় একটি ভুল পদক্ষেপ পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে আগুনের কুণ্ডলীতে নিক্ষেপ করতে পারে। বিশ্ববাসী এখন তাকিয়ে আছে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর বৈঠকের দিকে—সেখান থেকে কি শান্তির বার্তা আসবে, নাকি নতুন যুদ্ধের দামামা বাজবে?
প্রাসঙ্গিক হ্যাশট্যাগ (Hashtags):
#IsraelIranConflict #MiddleEastWar #BenjaminNetanyahu #DonaldTrump #GlobalCrisis #IranNuclearDeal #WarUpdate2025 #BreakingNewsBD #ইসরায়েল_ইরান_সংঘাত #নেতানিয়াহু #মধ্যপ্রাচ্য_সংকট #বিশ্ব_রাজনীতি #ব্রেকিং_নিউজ


No comments