ফরিদপুরে উত্তেজনা: ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা
📰 ফরিদপুরে উত্তেজনা: ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা
ফরিদপুরে বৃহস্পতিবার সকালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আহ্বানে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে একাধিক স্থানে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। দলীয় কর্মীদের গ্রেফতার, হয়রানি ও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে পুরো এলাকায় সৃষ্টি হয় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি এবং ঘন্টার পর ঘন্টা স্থবির হয়ে পড়ে মহাসড়ক।
🚧 সকাল থেকেই মহাসড়ক অবরুদ্ধ
সকাল ৯টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর, আলীপুর ও নগরকান্দা এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। তারা ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিতে দিতে মহাসড়কের মাঝখানে বসে পড়ে যান। এ সময় তারা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
অবরোধের কারণে ঢাকামুখী ও খুলনামুখী হাজারো যানবাহন আটকে পড়ে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যানজট প্রায় ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ফলে সাধারণ যাত্রী, অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
🗣️ অবরোধকারীদের দাবি ও বক্তব্য
অবরোধে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসন “রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে” আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তারা বলেন—
“আমরা শান্তিপূর্ণভাবে রাজনীতি করতে চাই, কিন্তু আমাদের ওপর অন্যায়ভাবে দমননীতি চালানো হচ্ছে। যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের মুক্তি দিতে হবে।”
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের এক স্থানীয় নেতা বলেন, “দলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধ না হলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।”
👮 পুলিশের উপস্থিতি ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ
ঘটনার পরপরই ফরিদপুর জেলা পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ মহাসড়ক থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে কয়েক দফা আলোচনা করে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। বিক্ষোভকারীরা যাতে সহিংসতায় না জড়ায়, সে বিষয়ে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে।”
তবে কয়েকটি স্থানে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়, কিন্তু বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়নি।
🚗 সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ
অবরোধের কারণে সকালে অফিসযাত্রী, শিক্ষার্থী, এমনকি জরুরি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সও আটকে পড়ে। অনেকেই বিকল্প সড়ক বা পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পণ্য পরিবহনে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটে, যার প্রভাব পড়বে স্থানীয় বাজারে।
🏛️ প্রশাসন ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে। আলোচনার মাধ্যমে সড়ক খুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের জেলা শাখা জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত কর্মীদের মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
📉 রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ফরিদপুরে এই অবরোধকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। স্থানীয় বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় দলীয় কর্মসূচিগুলো ক্রমেই সংঘাতপূর্ণ রূপ নিচ্ছে।
বর্তমানে বিকেল নাগাদ মহাসড়কের কিছু অংশে যান চলাচল আংশিকভাবে শুরু হলেও পরিস্থিতি এখনো সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি।

No comments