সিউল–ওয়াশিংটন চুক্তিতে ‘পারমাণবিক ডোমিনো’ শঙ্কা দেখছে উত্তর কোরিয়া
সিউল–ওয়াশিংটন চুক্তিতে ‘পারমাণবিক ডোমিনো’ শঙ্কা: উত্তেজনা বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে উত্তর কোরিয়া
সিউল ও ওয়াশিংটনের নতুন নিরাপত্তা চুক্তি প্রকাশের পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ংয়ের সরাসরি অভিযোগ—এই চুক্তি পূর্ব এশিয়ায় “পারমাণবিক ডোমিনো প্রভাব” সৃষ্টি করবে এবং অঞ্চলজুড়ে সামরিক উত্তেজনা আরও বাড়াবে।
উ. কোরিয়ার আশঙ্কা কী?
উত্তর কোরিয়ার মতে, যুক্তরাষ্ট্র–দক্ষিণ কোরিয়া জোট যত শক্তিশালী হচ্ছে, ততই অঞ্চলের অন্যান্য দেশও সামরিক শক্তি বাড়ানোর দিকে ধাবিত হতে পারে। বিশেষ করে জাপান বা তাইওয়ান ভবিষ্যতে প্রতিরক্ষা নীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে—পিয়ংইয়ং ঠিক এই দিকটাই তুলে ধরছে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া দাবি করছে,
-
যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি সামরিক উপস্থিতি,
-
যৌথ প্রতিরক্ষা কাঠামো,
-
এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সহযোগিতা—
এসবই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বাড়াবে।
তাদের ভাষ্যে, “যা ঘটছে, তা হচ্ছে অস্ত্র প্রতিযোগিতার নতুন দরজা খুলে দেওয়া।”
সিউল ও ওয়াশিংটনের বক্তব্য
অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এই নতুন নিরাপত্তা কাঠামো পুরোপুরি প্রতিরক্ষামূলক। তারা বলছে—
-
উত্তর কোরিয়ার ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা,
-
বাড়তি পারমাণবিক কর্মসূচি,
-
এবং সীমান্তে উত্তেজনা তৈরির ঘটনার কারণে
এই চুক্তি বাস্তবায়ন জরুরি হয়ে পড়েছিল।
ওয়াশিংটন ও সিউল স্পষ্ট জানিয়েছে, তাদের পদক্ষেপ কোনো দেশকে উত্তেজিত করার জন্য নয়।
পটভূমি: কেন বাড়ছে উত্তেজনা?
কোরীয় উপদ্বীপে গত কয়েক মাস ধরেই উত্তেজনা বাড়ছে।
-
উত্তর কোরিয়া একের পর এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছে।
-
দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র বৃহৎ আকারের যৌথ সামরিক মহড়া করছে।
-
চীন ও জাপানও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
এই প্রেক্ষাপটে নতুন সিউল–ওয়াশিংটন চুক্তি ভূরাজনৈতিকভাবে আরও চাপ বাড়াচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মন্তব্য
আঞ্চলিক বিশ্লেষকদের মতে, বিষয়টি আর কেবল দুই কোরিয়ার সীমাবদ্ধ সম্পর্ক নয়। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও রাশিয়ার অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ কারণে উত্তেজনা ভবিষ্যতে আরও জটিল আকার নিতে পারে।
পাঠকদের জন্য শেষ কথা—
এই চুক্তি কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি স্থাপনে সহায়তা করবে, নাকি আরেক দফা অস্ত্র প্রতিযোগিতার সূচনা করবে—তা সময়ই বলে দেবে।


No comments